আসুন ফেসবুক ব্যবহারে সতর্ক হই
যদি আমাদেরকে বলা হয় বর্তমান বিশ্বে সব থেকে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কি, আমরা প্রায় সবাই উত্তর দিবো যে "ফেসবুক"। ২০০৪ সালে মার্ক জুকারবার্গের হাতে প্রতিষ্ঠিত ফেসবুকের মাসিক গ্রাহক সংখ্যা বর্তমানে প্রায় ২০০ কোটিতে ঠেকেছে। হয়ত সামনে তা আরো বাড়বে।
বর্তমানে এই মাধ্যমের নিরাপত্তা নিয়ে অনেকেই চিন্তিত। অনেকের ফেসবুক আইডি হ্যাকড(বেদখল) হয়ে যাওয়ার কথা প্রায়ই শোনা যায়। ফেসবুকে আমাদের অনেক ছবি, তথ্য ও বন্ধুরা আছে। কিন্তু আমাদের ফেসবুক আইডি যদি হ্যাকড হয়ে যায়, তখন সবকিছুই হারিয়ে যাবে।
তবে কিছু পন্থা অবলম্বন করে আমরা খুব সহজেই ফেসবুকে আমাদের অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তা বাড়াতে পারব। এতে হ্যাকিংয়ের সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যাবে এবং হ্যাকড হলেও আমরা আমাদের ফেসবুক আইডি পুনরুদ্ধার করতে পারব। আমি আজকে আপনাদের এইরকম কয়েকটা পন্থা সম্পর্কে জানাবো।
একাউন্টের নিরাপত্তাঃ
- আপনার আইডিতে একাধিক ইমেইল রাখুন। প্রয়োজনে তা অনলি মি রাখুন।
- আইডিতে সিকিউরিটি প্রশ্ন দিয়ে রাখুন।
- আইডিতে মোবাইল নম্বর দিয়ে রাখুন। এটিও অনলি মি রাখতে পারেন।
- লগিন এপ্রুভাল দিয়ে রাখুন যেনো অন্য কোনো ব্রাউজার থেকে লগইন করলে আপনার অনুমতি লাগে। এক্ষেত্রে আপনাকে মোবাইল নম্বর দিয়ে রাখতে হবে, আপনি যে নম্বর দিবেন তাতে একটা কোড আসবে যা পরবর্তীতে বসাতে হবে যে ব্রাউজার থেকে লগইন করছেন সেখানে।
- আইডিতে ট্রাস্টেড কন্টাক্ট দিয়ে রাখুন। কমপক্ষে ৩ টি দেয়া যায়, ট্রাস্টেড কন্টাক্টে তাদের রাখুন যাদের সহায়তা নিয়ে আইডি উদ্ধার করতে পারবেন সহজে।
- কোনো ধরণের আনট্রাস্টেড লিঙ্কে ক্লিক করা থেকে বিরত থাকুন। বিশেষ করে ফ্রি ফেসবুক ব্যবহারের প্রলোভন, টাকা ইনকামের বা বিভিন্ন ধরণের এপ্লিকেশন এর।
- ২/৩ মাস অন্তর পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করুন। পাসওয়ার্ডে ছোট হাতের অক্ষর, বড় হাতের অক্ষর, নম্বর সব কিছুর কম্বিনেশন করুন।
অন্যান্যঃ
- ফেসবুক আসলে একটা ভার্চুয়াল জগত। অনেকে এটাকে আসল জগত মনে করে ভুল করে বসেন। কোথায় আছেন, কি করছেন সব কিছু ফেসবুকে দেয়াটা নিরাপত্তার জন্য অনেক বেশি ক্ষতিকর হতে পারে। এজন্য এটি থেকে বিরত থাকুন। সব ক্ষেত্রে সব কিছু না জানানোয় শ্রেয়।
- টাইমলাইন রিভিউ অন রাখুন যেনো যখন তখন অন্যের দেয়া ট্যাগে বিব্রতকর অবস্থায় না পড়েন।
- অপরিচিত ফ্রেণ্ড রিকুয়েষ্ট এক্সেপ্ট না করায় ভালো।
- একান্ত ব্যক্তিগত তথ্য ফেসবুকে দেয়া উচিত নয়, এতে অনেকে এটার মাধ্যমে পরে আপনার ক্ষতি করতে পারে।
- আপনার টাইমলাইন বন্ধ রাখতে পারেন যেনো কেউ কিছু না লিখতে পারে। আর আপনি যা শেয়ার করবেন তার প্রাইভেসি পাবলিক না দিয়ে ফ্রেন্ডস রাখতে পারেন।
ফেসবুক আমাদের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি মাধ্যম। এটি যেমন আমাদের জন্য উপকারী তেমন এর মাধ্যমে অনেক ক্ষতি করাও সম্ভব। এজন্য ফেসবুক ব্যবহারে আমাদের সচেতন থাকা জরুরী। মনে রাখতে হবে, এটি কোনো বাস্তব জগত নয় বরং একটি ভার্চুয়াল জগত। এখানে আমি যা করব সেটির মাধ্যমেই অন্যরা আমাকে চিনবে এবং আমার ব্যাপারে ধারণা করবে। এজন্য এটি ব্যবহার করার সময় আমাদের সব বিষয়গুলো লক্ষ্য রাখতে হবে যেনো এটির সঠিক ব্যবহার আমরা করতে পারি।
Comments
Post a Comment